তহিদুল ইসলাম রাসেল, চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধানঃ-
রবিবার (২০ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে বেড়েছে বিভিন্ন পণ্যের যোগান। এরমধ্যে প্রতিটি আড়তের দেখা গেছে পণ্যের বাড়তি মজুদও। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ভোগ্য পণ্যের যোগান যথেষ্ট। দাম কিছুটা কমেছে। তবে চাহিদা আগের মতো নেই। দিন দিন নিন্মমুখী হচ্ছে দামও।
খাতুনগঞ্জের মের্সাস জনতা এন্টারপ্রাইজের কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, পেঁয়াজ, রসুন, আদার দাম ক্রমাগত নিচের দিকে নামছে। তবে দাম কমলে ক্রেতাও কমে যায়। আগে সকালের মাল বিকালে থাকতো না। এখন যোগানের তুলনায় চাহিদা ও বিক্রয় কমে গেছে। এ কারণে গুদামে কিছু মাল সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। তবে তা সাময়িক সময়ের জন্য। কাঁচামাল দ্রুতই নষ্ট হয়ে পড়ায় অতি মজুদের কোনো সুযোগ নেই আমাদের।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নগরীর খাতুনগঞ্জ, মাঝিরঘাট, নাসিরাবাদ ,পাহাড়তলী, হালিশহর, অলংকার মোড়, ভাটিয়ারি এলাকায় পণ্য মজুদের জন্য গুদাম রয়েছে। এসব বাণিজ্যিক গুদামের সংখ্যা প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ মতো। আমদানিকারকরা এখানে ভোগ্য পণ্যগুলো মজুদ করে রাখেন।
চট্টগ্রামে আসন্ন রমজানকে ঘিরে চাহিদার তুলনায় বাজারে সব ধরণের পণ্যের যোগান বেড়েছে। তবে প্রতিবছরই যোগানকে ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠে অসাধু ব্যবসায়ীদের চক্র। যাদের কাজ মজুদদারি করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা। তবে এবছর বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে তৎপরতা বাড়াতে যাচ্ছে প্রশাসন। ভোগ্য পণ্যের অতি মজুদদারি ঠেকাতে ছুটির দিনেও অভিযান চালাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এমনকি এসব অনিয়ম রোধে সক্রিয় থাকবে সংস্থাটির গোপন সোর্স। অন্যদিকে জনগণের সরাসরি অভিযোগকে আমলে নিয়ে মাঠে তৎপরতা বাড়াবে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার ‘চোখ’।
এদিকে বাজারে নিয়মিত মনিটরিং ও বিভিন্ন অনিয়ম ঠেকাতে মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম ভোক্তা অধিদফতরের সহকারি পরিচালক মো. আনিছুর রহমান মহানগর নিউজকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের দাম ও মান নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরসহ জেলার প্রতিটি উপজেলায় গোপন সংবাদ ও বিভিন্ন সোর্স থেকে কোনো অভিযোগ বা অনিয়ম পেলে অভিযান চালানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযানে যদি দেখা যায় কেউ পণ্যের অবৈধ মজুদ করছে। সেক্ষেত্রে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর রমজান উপলক্ষে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। এমনকি শুক্রবার –শনিবারও অভিযান করার পরিকল্পনা আছে। অভিযান টিম গত সপ্তাহেও নগরীর খাতুনগঞ্জে গেছে। ব্যবসায়ীদের দোকান ও পণ্যের মজুদ পরির্শন করা হয়েছে। এবছর ছোলা, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। আর তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান হয়েছে। যার ফল এখন সাধারণ মানুষ অনেকটা ভোগ করছেন। সামনে মাঠ পর্যায়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে আমাদের এসব কার্যক্রম আরও সক্রিয় থাকবে।’
অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পাশাপাশি বাজারে পণ্যের মান, অবৈধ মজুদদারি রোধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে একটি টিম।
Leave a Reply