ধর্ম এবং সময় –
ইসলাম ধর্ম মতে আমরা সুন্দর সুন্দর মসজিদ বানাচ্ছি আর কিয়ামতের দিকে এগোচ্ছি।
এলাকায় যখন সাধারন মানের মসজিদ ছিল, আসবাবপত্র গুলোও তেমন দামী ছিলো না। তাই চুরি যাওয়ার ভয়ও ছিলো না। ঐ সময় বলতে গেলে সারাদিনই মসজিদ ঘর খোলা থাকতো। মুসল্লিরা যখন তখন এসে নামাজ-কোরআন পরতে পারতেন। গরীব মানুষেরা একটু গা এলিয়ে বিশ্রামও নিতে পারতেন। ঝড়-বৃষ্টিতে পথচারী আশ্রয় নিতেন। অনেক সময় দুরের পদযাত্রীরা অনায়াসে রাত কাটাতেন মসজিদে।গ্রামের অনেক মসজিদ চলতো কোন খরচ ছাড়াই,ইমাম-মোয়াজ্জিন বেতন দিয়ে রাখতে হতো না,জানলেওয়ালা মুসল্লী মাসের পর মাস নামাজ পরাতেন কোন প্রকার বেতন/ হাদিয়া ছাড়াই।
তারপর শুরু হলো মসজিদের উন্নয়ন কর্মসূচী। গরমে মানুষের কষ্ট হয় তাই এসি কেনা প্রয়োজন,,দামী ঘড়ি,দামী মাইক্রো ফোন ব্যবহারকরা শুরু হলো মসজিদে।শুরু হলো আবু-বকর (রা), ওমর (রা) এর দানের ইমোশনাল কাহিনী দিয়ে টাকা কালেকশন।
মাশাল্লাহ পুরো মসজিদ এখন দামি টাইলস, এমনকি বাইরের ওয়াল পর্যন্ত কারুকার্যে ভরা। দামি দামি কার্পেট। তারপর আবার ২ পাশে সারি সারি চেয়ার তো আছেই, আগে মসজিদে ২-৩ জন দায়িত্ব নিলেই হয়ে যেতো, আর এখন মসজিদ কমিটিও অনেক বড়.!
প্রায় মসজিদে এলাকার টপ ঘুষখোর, চোর, সুদখোর, অত্যাচারী,ক্ষমতাধর,বাটপার প্রকৃতির লোকেরাই সেই কমিটির সদস্য ও সভাপতিও।
মসজিদের ভ্যালু এখন অনেক। চুরি যাওয়ার ভয় তো আছেই। অতএব সারাক্ষণ মসজিদ খোলা রাখা যাবে না।তাই এখন প্রায় সব মসজিদই নামাজের সময় ব্যতীত অন্যান্য সময় তালাবদ্ধ থাকে, মসজিদে টাইম মেনে মুসল্লিদের আসা যাওয়া করতে হবে। গরীবেরা এখন ভয়ে ভয়ে মসজিদে ঢুকে টাইলস কার্পেট অপরিচ্ছন্ন হয়ে যায় কিনা। তাদের পরিচিত আল্লাহর ঘর এখন পুরোটাই অচেনা।আগের দিনে মানুষ মসজিদের দায়িত্ব নিতে ভয় পেত, কোন ভুল হয়ে যাচ্ছে কিনা। এখন মসজিদে চেয়ারম্যানের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সারা পথ হেঁটে এসে চেয়ারে বসে নামাজ পড়ে এ ব্যাপারে ইমাম, খতিবদের কোনো ফতোয়া নাই। সুদখোর, চোর,ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে কোনো ফতোয়া নাই। আস্তে আস্তে কেয়ামতের দিকে এগোচ্ছি আমরা। নামাজিরা নামাজ শেষ করার আগে মসজিদ তালাবদ্ধ করার জন্য ইমাম মুয়াজ্জিন দাড়িয়ে থাকে দরজার গোড়ায়।ওদের ও সময় নাই নিজের দায়িত্ব পালনে। ভবিষ্যতে আরো কতকিছু দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা আল্লাহ ভালো জানেন।এমন পরিস্থিতি এখন সারাদেশেই।
Leave a Reply