লেখক- মোঃ ছিদ্দিক
প্রবাস জীবন, তার মানে হলো পরিবার পরিজন ছেড়ে অনেক দূরে একা থাকা। যেখান থেকে মন চাইলেও পরিবারের কাছে আসতে পারে না।
অনেক পরিকল্পনা এবং অর্থনৈতিক ভাবে সাবলীল হয়ে তার পর আস্তে হয়।
অনেকের আত্মীয়স্বজন, পিতা-মাতা পৃথিবী থেকে বিদায় নেন, যাদের হায়াত শেষ, কিন্তু প্রবাসীরা চাইলেও আস্তে পারেনা। আবেগের কাছে হেরে যায় কিন্তু বিবেক দিয়ে, মনের মধ্যে পাথরচাপা দিয়ে সহ্য করে দিন পার করে। তাদের জন্য দূর থেকে দোয়া করা ছাড়া আর কিছুই থাকে না, এর নাম প্রবাস জীবন।
ঈদ কেমন উদযাপন করে?
প্রবাসীদের মতে, তাদের কোন ঈদ নেই, নেই কোনো নিজ দেশের সেই আনন্দ, নেই কোনো সেই নতুন কাপড়, নতুন জুতোর সেই মহা খুশি, নেই কোনো সেই পরিবারের সাথে থেকেই ভাগ করে নেওয়ার সেই আনন্দ।
আনন্দ একটাই, যদি পরিবারের সবাই খুশি থাকে, তাহলে প্রবাসীরা খুশি। খেয়ে না খেয়ে পরিশ্রমের সেই টাকা দিয়ে পরিবারের জন্য সুখ কিনে নেওয়ার নামই হল প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন।
সেমাই চিনি কি নিজ দেশের মত হয়?
প্রথমত সকালে গোসল করে গায়ে একটু আতর লাগিয়ে নামাজ পড়তে যায়, নামাজ শেষে রুমের সহযোগীদের সাথে ঈদের কৌশল বিনিময় করা হয়। এরপর রুমের সহযোগীদের নিয়ে কিছু বাংলাদেশী সেমাই, পায়েস এবং গরু অথবা খাশির মাংস রান্না করা হয়।পরিচিত বন্ধুদের দাওয়াত করা হয়।
সবাই একসাথে বসে ঈদের সেমাই, পায়েস, নাস্তা খাওয়া শেষ করে। এরপর রুমে থেকে ঘুম আর ঘুম যা দুই একদিন ছুটি মিলে, সেগুলো ঘুমের মধ্যে চলে যায়। দেশের মত এদিকে সেদিকে আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া, ঐ আয়োজন প্রবাসে নেই।
তাই তাদের এক মাত্র সঙ্গী রুম আর ঘুম। এর মধ্যেই ঈদ আনন্দ শেষ হয়ে যায়।
মোবাইল ফোনে ভিডিও কলে মা-বাবা আত্মীয়স্বজনদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়, এই টুকু ব্যাস। আবার কর্মক্ষেত্রে যোগদান হওয়া দিনের পর দিন কাজ করা এভাবেই বছরের পর বছর চলে যায়। এরই নাম প্রবাস জীবন।
অনেকেই সেমাই চিনি কিছু আয়োজন এর ব্যবস্থা করতে পারেনা। শুধু মাত্র সেই স্বাভাবিক ভাবেই তার দিন গুলো চলে যায়। এভাবেই ঈদ শেষ হয়ে যায়।
প্রবাসীরা তাদের মৃত মা বাবা ভাই বোন আত্মীয়স্বজনদের জন্য দুর থেকে দোয়া ও প্রার্থনা করে থাকেন, যাতে সৃষ্টিকর্তা মরহুম-মরহুমাদের জন্য কবরকে জান্নাত বানিয়ে দেন।
সকল প্রবাসী সুখে থাকুক, ভালো থাকুক তাদের প্রতি সেলুট জানাই।
Leave a Reply