মণিরামপুর প্রতিনিধি:-
মণিরামপুরে চেক জালিয়াতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত চাঁদপুর-মাঝিয়ালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন মুন্নাকে চাকুরী থেকে সাময়িক বহিস্কার করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। সাময়িক বহিস্কারের পর রোববার ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মীয় শিক্ষক সংকর কুমার রায়কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রভাষক মামুন-অর-রশিদ জুয়েল বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
সুত্র জানায়, উপজেলার মাতৃভাষা কলেজের অধ্যক্ষ হাসানুল কবিরের স্ত্রীকে চাকুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহন করেন প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন মুন্না। চাকুরী দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অধ্যক্ষকে ১টি ৭ লক্ষ ও ১টি ১ লক্ষ টাকার মোট ৮ লক্ষ টাকার ২টি চেক প্রদান করেন জামাল উদ্দিন। কিন্তু তার একাউন্টে টাকা না থাকায় চেক ২টি ডিজঅনার হয়। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ হাসানুল আদালতে মামলা করেন। এ মামলায় ৩১ জুলাই যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৮ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।
রায়ের বিবরনীতে উল্লেখ করা হয়, মণিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়নে গাঙ্গুলিয়া প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন চাঁদপুর-মাঝিয়ালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন মুন্না। অভিযোগ রয়েছে মাতৃভাষা কলেজের অধ্যক্ষ হাসানুল কবিরের স্ত্রীকে প্রতিবন্ধী স্কুলে চাকুরী দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামাল উদ্দিন ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেও তিনি চাকুরী দিতে ব্যর্থ হন। ফলে জামাল উদ্দিন গত বছরের ১ ও ২৫ জুন আল আরাফাহ ব্যাংকের মনিরামপুর শাখায় তার নিজের একাউন্ট নম্বরের বিপরীতে অধ্য হাসানুল কবিরকে দুটি চেক প্রদান করেন। তবে তার একাউন্টে কোন টাকা জমা না থাকায় ওই চেক দুটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ডিজঅনার করেন। ফলে গত বছরের ৪ অক্টোবর অধ্যক্ষ হাসানুল কবির বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে যশোর দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন। পরবর্তিতে আদালত থেকে জামিন নেন জামাল উদ্দিন। কিন্তু জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি আদালতে হাজির হননি। ফলে আদালত তার অনুপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য প্রমান শেষে চলতি বছরের গত ৩১ জুলাই যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট ধারায় জামাল উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৮ লক্ষ টাকা জরিমান করেন।
বহিস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মামুনুর-অর-রশীদ জুয়েল জানান, আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় রোববার ম্যানেজিং কমিটির সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে তাকে চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর রোববার থেকে বহিস্কারাদেশ কার্যকর হবে। পত্রের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে তাঁকে নিয়মিত স্কুলে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি করে তিনি স্ব-পদে যোগদান না করলে তাঁর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চাঁদপুর-মাঝিয়ালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সংকর কুমার রায় বলেন, আমাকে পত্রের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জামাল উদ্দিন জানান, তিনি বরখাস্তের কপি এখনও হাতে পাননি।
Leave a Reply