মঠবাড়িয়া(পিরোজপুর) প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পূর্ব বিরোধের জের শফিকুল ইসলাম (৪০) নামে এক জাতীয় পার্টি’র নেতাকে কুপিয়ে বাম পা বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গুরুতর জখম শফিকুল ইসলামের মা মোছা. মমতাজ বেগম (৬৫) বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মঠবাড়িয়া থানায় ৭ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন।
আসামিরা হলো, তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মো. নাসির হাওলাদার (৫০), ছেলে শামীম হাওলাদার (৪২), ছোট মাছুয়া গ্রামের মৃত. ছালাম হাওলাদারের ছেলে ছগির হাওলাদার (৪৫), মধ্য তুষখালী গ্রামের মৃত গণি আকনের ছেলে হাবিব আকন (৫৫), হাবিব আকনের ছেলে হুমায়ূন (২৫), তুষখালী গ্রামের জুলফিকার আলী শরীফের ছেলে খায়রুর ইসলাম মুছা শরীফ (৫০), ছোট মাছুয়া গ্রামের মৃত. আলী হোসেন পঞ্চায়েতের ছেলে বশির পঞ্চায়েত (৪২)।
আহত শফিকুল তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও তুষখালী গ্রামের মো. আইয়ূব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশের হাতে আটক হওয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মো. নাসির হাওলাদারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমি, ব্যবসা সংক্রান্ত ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদার, তাঁর ছোট ভাই নাসির হাওলাদার, ছেলে শামীম হাওলাদার, সাবেক ইউপি সদস্য সগীর হোসেন হাওলাদার, মুছা শরীফ ও হাবিব আকনসহ বিভিন্ন জনের সাথে শফিকুলের বিরোধ চলে আসছিলো। মুসা শরীফের সাথে চলমান একটি মামলায় শফিকুল আদালতে হাজিরা দিতে বৃহস্পতিবার সকালে মোটরসাইকেল যোগে তুষখালী থেকে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মাঝেরপুলের সন্নিকটে ফরাজি বাড়ির সামনে কালভার্ট এর উপরে আসা মাত্রই একটি মহেন্দ্র গাড়ি শফিকুলের গতিরোধ করে। এ সময় শফিকুল মোটরসাইকেল থেকে নেমে পিছনের দিকে দৌড় দিলে হামলাকারীরা মাহেন্দ্র থেকে নেমে তাকে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বাম পা বিচ্ছিন্ন করে। এ সময় এলোপাতাড়ি কোপানোর কারণে শফিকুলের পেটের ভুড়ি বেড়িয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। স্থানীয়রা আহত শফিকুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে বরিশাল থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সফিকুলের অপারেশন সম্পন্ন হলেও গত দুই দিনেও তাঁর জ্ঞান ফেরেনি বলে জানা গেছে।
পিরোজপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া সার্কেল) মো. ইব্রাহিম জানান, তদন্তের স্বার্থে এ মূহুর্তে অনেক কিছু প্রকাশ করা সম্ভব নয়। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে প্রশাসনের একাধিক টিম কাজ করছেন।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল বলেন, মামলার এজাহার নামীয় ১ নং আসামি তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মো. নাসির হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply