লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি;-
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় আমাদের করণীয়’ বিষয়ে লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে হেযবুত তওহীদের ‘আলোচনা সভা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সকাল ১১:০০ ঘটিকায় লক্ষ্মীপুর রিপোর্টার্স
ক্লাবে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপসম্পাদক প্রকৌশলী রাকীব আল হাসান।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন লক্ষ্মীপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. জামাল হোসেন সোহাগ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুল ইসলাম ভূঁঞা, সহসভাপতি শরিফ হোসেন সাদ্দাম ও সদর উপজেলা সভাপতি আরমান হোসেন শাকিল।
অনুষ্ঠানে বক্তারা অর্থনীতিক ও রাজনৈতিক সংকট নিয়ে কথা বলেন এবং সংকট সমাধানের উপায় সম্পর্কে নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন। মুখ্য আলোচক রাকিব আল হাসান তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান এই বিশ্বায়নের যুগে পৃথিবীর এক প্রান্তে একটা সমস্যা হলে অন্য প্রান্তেও তার ঢেউ লাগে। আজ করোনা মহামারির পর আবার যখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ লেগেছে তখন বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিক সংকট শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের আসঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এরই মধ্যে আসঙ্কা রয়েছে নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সংকট। সব মিলিয়ে দেশে এক
অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন, আসন্ন এই সংকট নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে, সমাধানের পথ খুঁজতে হবে, শুধু সরকারের দিকে চেয়ে থাকলে হবে না। তিনি আরও বলেন, এই সংকটের বহুবধি কারণ থাকলেও মূল কারণ হলো- আল্লাহর
হুকুম, বিধান বাদ দিয়ে মানব রচিত আইন-কানুন, দন্ডবিধি, পুঁজিবাদী অর্থনীতি গ্রহণ করা। আমরা আল্লাহর দেওয়া সত্যদীন, প্রকৃত ইসলাম ত্যাগ করে ইহুদি-খ্রিষ্টানদের তৈরি করা জীবনদর্শন আমাদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত করেছি, এর ফলেই আজ বিশ্বব্যাপী এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এখন এ থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে আল্লাহর হুকুমের উপর, ন্যায় ও সত্যের উপর ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসপাতকঠিন এক জাতিসত্তা গড়ে তুলতে হবে। আল্লাহর দেওয়া প্রকৃত ইসলামের বাস্তব ভিত্তিক রূপ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি দাবি করেন,
ইসলামের সেই বাস্তব ভিত্তিক রূপ হেযবুত তওহীদের কাছে আছে যা মানুষ গ্রহণ করলে সমাজ থেকে রাজনৈতিক ও অর্থনীতিক সমস্যাই নয়, সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এটা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের মধ্যে। তিনি হেযবুত
তওহীদের উদ্যোগে গড়ে তোলা নানা উন্নয়ন প্রকল্পের তথ্য তুলে ধরেন এবং হেযবুত তওহীদের উপর অন্যায়ভাবে যে হামলা করা হয়েছে, হতাহত করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে, নির্যাতন ও মিথ্যাচার করা হয়েছে সেগুলোও তুলে ধরে প্রতিটা ঘটনার বিচারের দাবি
জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মো. জামাল হোসেন সোহাগ বলেন- দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধর্মান্ধতা ও ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থান ঘটছে। মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে দেশে দেশে অপরাজনীতি করা হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
সাধারণত সরকারগুলো শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে এই সঙ্কট মোকাবেলা করার প্রচেষ্টা করে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু শক্তিপ্রয়োগ করেই ধর্মান্ধতা মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি সঠিক আদর্শও লাগবে। ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরে
জনগণকে সচেতন করতে হবে। উগ্রবাদ মোকাবেলায় ইসলামের সেই প্রকৃত ব্যাখ্যা বা সঠিক আদর্শ (কাউন্টার ন্যারেটিভ) তুলে ধরছে হেযবুত তওহীদ অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে হেযবুত তওহীদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয় এবং হেযবুত তওহীদের চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে অবহিত করা হয়।
হেযবুত তওহীদের দাবি-
১) হেযবুত তওহীদ ইসলামের যে সঠিক আদর্শ নিজেদের মধ্যে বাস্তবায়ন করে নিজেদের মধ্যকার অর্থনীতিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, রাজনৈতিক সকল সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছে, সেই আদর্শ রাষ্ট্রে কার্যকরী করে রাষ্ট্রের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এ বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন।
২) যথাযথ আইন মান্য করে আমরা যেন আমাদের বক্তব্য জনগণের কল্যাণে তুলে ধরতে পারি সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কেউযেন আমাদের মত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
৩) সর্বশেষ পাবনায় হেযবুত তওহীদ সদস্য মো. সুজন মন্ডলের হত্যাকারীসহ অন্যান্য সদস্যদের যারা হত্যা করেছে, সে সকল হত্যাকারী খুনিদের গ্রেফতার করে সব্বোর্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৪) যে সকল অপপ্রচারকারী ও ষড়যন্ত্রকারী সোস্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে মিথ্যা প্রোপাগাÐা চালাচ্ছে এবং হত্যার হুমকি দিচ্ছে সে সকল হুমকিদাতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৫) জুম্মার নামাজে খুৎবায় এবং ওয়াজ মাহফিলের মত ধর্মীয় সভাকে ব্যবহার করে যে সকল উগ্রবাদী বক্তা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও উস্কানীমূলক ওয়াজ করে, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
৬) সোস্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ছবি পোষ্ট করে হেযবুত তওহীদের এমাম ও সদস্যদের ব্যক্তিত্ব হরণ, হত্যার হুমকী, হত্যা করার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করার বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিলীয় সকল অভিযোগ আমলে নিয়ে অপরাধীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৭) হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বসতবাড়ি-ঘরের, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের, হেযবুত তওহীদের অফিস ও মসজিদসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
Leave a Reply